search the site
Bangladeshi Marine Cadets face an image problem
ইমেজ সংকটে বাংলাদেশী মেরিন ক্যাডেটরা
জসীম চৌধুরী সবুজ
সংশ্লিষ্টরা জানান, এমনিতেই বহির্বিশ্বে শিপিং ব্যবসায় মন্দা ও পরিবহন ভাড়া কমে যাওয়ায় বহু জাহাজ মালিক তাদের জাহাজকে স্ক্যাপ মূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এর প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশে সমুদ্রগামী জাহাজ মালিকদের ওপর। দেশে সমুদ্রগামী জাহাজের সংখ্যা ২০০৯ সালে যা ছিল ২৪টি, ২০১২ সাল পর্যন্ত তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৭০-এ। কিন্তু এরপর বিশ্ব নৌবাণিজ্যে মন্দার ফলে জাহাজ ব্যবসায় ধস নামলে বর্তমানে তা এসে দাঁড়িয়েছে ৩৮টিতে। এ অবস্থায় কোনো রকম সম্ভাব্যতা যাচাই না করেই বেসরকারি খাতে আরও ১২টি মেরিন ইন্সটিটিউটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ফলে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিবছর যেসব ক্যাডেট বের হচ্ছে তাদের সিংহভাগই কোনো জাহাজে ওঠার সুযোগ পাচ্ছে না। ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম জার্নালের উদ্বৃতি দিয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১১-১২ সালে বিদেশী জাহাজে বাংলাদেশী মেরিনারের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৪শ। তারা প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার রেমিটেন্স দেশে পাঠাত। বর্তমানে বিদেশী জাহাজে নতুন করে কোনো মেরিনারের চাকরি তো হচ্ছেই না বরং আগের সংখ্যা কমে এখন দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২শ জনে। একইভাবে রেমিটেন্স প্রেরণের হারও অর্ধেক কমে ৫শ কোটি টাকার কাছাকাছি চলে এসেছে।
উল্লেখ্য, মেরিন একাডেমি থেকে পাস করা ক্যাডেটদের চাকরির জন্য মূলত নির্ভর করতে হয় দেশীয় জাহাজের ওপর। অন্যান্য প্রাইভেট মেরিটাইম ইন্সটিটিউটের ক্যাডেটদের চাকরির বাজার সন্ধান করে দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মেরিন একাডেমি থেকে বের হওয়া ক্যাডেটদের কর্মসংস্থানে নেই কোনো কার্যকর উদ্যোগ। ফলে প্রতিবছর বাড়ছে বেকার ক্যাডেটের সংখ্যা। গত তিন বছরে পাস করে বের হওয়া ৫ শতাধিক মেরিন ক্যাডেট তাদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে শংকিত।
শিপিং সেক্টরে প্রবীণ বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বর্তমান অবস্থাকে ভয়াবহ উল্লেখ করে বলেন, গ্লোবাল চেঞ্জের দিকে কোনো খেয়াল না রেখে পঙ্গপালের মতো মেরিন ক্যাডেট ভর্তি করা হচ্ছে। কোনো রকম সম্ভাব্যতা যাচাই না করে দুর্নীতির মাধ্যমে ১২টি প্রাইভেট মেরিন ইন্সটিটিউটকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটি একটি বিশেষায়িত সেক্টর। এখানে যেসব শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছে তারা পরে আর অন্য কোনো লাইনে গিয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে না।
চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমির কমান্ড্যান্ট ড. সাজিদ হোসাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুরুতে মেরিন একাডেমিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত ছিল। ২০১২ সালে সিদ্ধান্ত হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনেই মেরিন বিশ্ববিদ্যালয় হবে, মেরিন একাডেমি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবেই থাকবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকায় পাস করে বের হওয়া ক্যাডেটদের বেকার থাকাসহ অন্যান্য দাবি নিয়ে ক্যাডেটদের আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এসব নৌমন্ত্রণালয়ের বিষয়। তারাই ভালো বলতে পারবেন।