চট্টগ্রাম বন্দর ঘিরে তৈরি হচ্ছে বিদেশি বিনিয়োগের প্ল্যাটফরম

Comments Off on চট্টগ্রাম বন্দর ঘিরে তৈরি হচ্ছে বিদেশি বিনিয়োগের প্ল্যাটফরম

চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরে বিদেশি বিনিয়োগের প্ল্যাটফরম তৈরি হচ্ছে। এই বছরেই গড়ে ওঠবে মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল। দেশের অর্থনীতির গেম চ্যাঞ্জার খ্যাত মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রে দুইটি টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু হবে। বে-টার্মিনালে ডিপি ওয়ার্ল্ড ও সিংগাপুর পোর্ট অথরিটি কর্তৃক দুইটি টার্মিনালের কাজ শুরু হচ্ছে।

বিশ্ব ব্যাংক গত বুধবার নিউইয়ার্ক বে-টার্মিনালের ব্রেক ওয়াটার ও ড্রেজিংয়ের জন্য ৪৬০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি সই করেছে। বছরের শেষ প্রান্তে লালদিয়ার চর এলাকায় টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে। এনসিটির জন্য নিয়োগকৃত ট্রানজেকশন এডভাইজারের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দরের দীর্ঘ ইতিহাস, দেশের অর্থনীতিতে এর ভূমিকা এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃক গৃহিত প্রকল্পসমূহ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম মনিরুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।

চট্টগ্রাম বন্দর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্বের ১ নম্বর তুলা আমদানিকারক দেশ হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর তুলা ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী সংরক্ষণাগার গড়ে তোলার মাধ্যমে বছরে ১০/১২ বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারে। বাংলাদেশসহ পার্শ্ববর্তী দেশসমূহ মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলের সুবিধা গ্রহণ করতে পারে। বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, দেশের ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের চাহিদার বিবেচনায় বাংলাদেশ গ্রিনপোর্ট এবং আধুনিক ও প্রযুক্তি নির্ভর ও নিরাপদ পোর্ট নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে।

আগামী কয়েক বছরের মধ্যে গ্রিনপোর্ট নির্মাণ করা না গেলে জাহাজের ভাড়া বৃদ্ধিসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়তে হবে। তিনি বলেন, এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দর কেন্দ্রিক বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে প্রতিদিন প্রায় ১ মিলিয়ন ক্ষতি হচ্ছে। চট্টগ্রাম দক্ষতা, অটোমেশন, সরাসরি সার্ভিস দেওয়া সম্ভব হলে জাহাজের ভাড়াও শতকরা ৩০ ভাগ থেকে ৪০ ভাগ কমে আসবে। দ্রুত শিপমেন্ট সম্ভব না হওয়ায় বিশ্বের উচ্চ মূল্যের পণ্য তৈরির অর্ডার হারাচ্ছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম বন্দর সেই লক্ষ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক উন্নত বন্দরের আদলে সকল কমপ্লায়েন্স অনুসরণ করে এগিয়ে যাচ্ছে।

বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের বিশাল সংখ্যক কর্মক্ষম ইয়াং যুবক এবং বিদেশি বিনিয়োগের সর্বোত্কৃষ্ট স্থান হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। তিনি বলেন, ২০২৯ সালে মাতারবাড়ী এবং ২০৩১ সালে বে-টার্মিনাল নির্মাণ হলে দেশের অর্থনীতির আমূল পরিবর্তন হবে। মাতারবাড়ী পোর্ট ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্ট হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যমে এতদাঞ্চলের বাণিজ্য সুবিধার প্রসার গড়বে। ১৮৮৭ সালে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার পোর্ট কমিশনার্স অ্যাক্ট প্রণয়ন যা ২৫ এপ্রিল ১৮৮৮ সালে কার্যকর হয়। তখন থেকেই প্রতিবছর ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম বন্দর দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

গতকাল মতবিনিময় অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বোর্ড সদস্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

source : ittefaq

Comments are closed.