search the site
পাকিস্তান থেকে দ্বিগুণ কনটেইনার নিয়ে আবারও বাংলাদেশ আসছে সেই জাহাজ
মাসুদ আলম : গত মাস নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে পাকিস্তানের করাচি বন্দরের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের সরাসরি কনটেইনার জাহাজ যোগাযোগ চালু হয়। দেশ স্বাধীনের পর ৫৩ বছরের মধ্যে এটিই ছিল পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের প্রথম ঘটনা। প্রথমবার ৩৭০ একক কনটেইনার আনা হয় জাহাজটিতে করে। এর মধ্যে পাকিস্তান থেকে আনা হয় ২৯৭ একক কনটেইনার, বাকিগুলো সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে।
পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে পণ্য নিয়ে কনটেইনারবাহী সেই জাহাজটি আবারও আসছে চট্টগ্রাম বন্দরে। ‘এমভি ইউয়ান জিয়াং ফা ঝং’ নামের জাহাজটি আগামী শুক্রবার বন্দরের জলসীমায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। জাহাজটিতে এবার আগেরবারের দ্বিগুণ; ৮২৫টি একক কনটেইনারে পণ্য আনা হচ্ছে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে।PauseMute
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র বলছে, সেই জাহাজটি ফিরে যাওয়ার পর সম্ভাব্য ৮২৫ একক কনটেইনার নিয়ে আবার আসছে। এসব কনটেইনার নামিয়ে অন্তত ১২০০ একক কনটেইনার নিয়ে জাহাজটি করাচি বন্দরে ফেরত যেতে পারে বলে শিপিং কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে।
মেরিন ভ্যাসেল ট্রাফিক ওয়েবসাইটে দেখা যায়, জাহাজটি এখন শ্রীলঙ্কার কাছাকাছি রয়েছে। গত ১১ ডিসেম্বর পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে সর্বশেষ কনটেইনার পণ্য বোঝাই করা হয় জাহাজটিতে।
শিপিং কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, মূলত পোশাকশিল্পের কাঁচামাল ও রাসায়নিক, খনিজ পদার্থ ও ভোগ্যপণ্য—এসব পণ্যই পাকিস্তান থেকে আনা হয় কনটেইনারে। এবারও জাহাজটিতে এসব পণ্য থাকতে পারে।
স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম বন্দরে পাকিস্তানের জাহাজ নোঙরকে ঐতিহাসিক পরিবর্তনের প্রতীক বলে এক প্রতিবেদনে মন্তব্য করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেনডেন্ট। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি পাকিস্তান-বাংলাদেশের ঐতিহ্যগত জটিল কূটনৈতিক সম্পর্কে উষ্ণতার নতুন দিগন্তের সূচনা করছে। সম্প্রতি ভারত ঘেঁষা শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে এই উষ্ণতার সূচনা হয়েছে।
দুবাইভিত্তিক কনটেইনার জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা ‘ফিডার লাইনস ডিএমসিসি’একটি কনটেইনার জাহাজ দিয়ে নতুন এই বাণিজ্যিক সেবা লাইন চালু করেছে। এই সংস্থার বাংলাদেশে স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে রয়েছে কর্ণফুলী লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান রিজেনসি লাইনস লিমিটেড।
এ ব্যাপারে গ্রুপটির নির্বাহী পরিচালক আনিস উদ দৌলা গণমাধ্যমকে বলেন, প্রথমবারের তুলনায় এবার পাকিস্তান থেকে কনটেইনার আনার হার বেড়েছে। এখন একটি জাহাজ ৩৮ থেকে ৪২ দিনে একবার আরব আমিরাত থেকে পাকিস্তান হয়ে চট্টগ্রামে আসছে।
কনটেইনারের সংখ্যা বাড়লে নতুন এই পথে জাহাজের সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে বলেও জানান তিনি।
করাচি থেকে প্রথমবার পণ্যবাহী জাহাজ আসার পর বাংলাদেশে পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ এই সরাসরি শিপিং রুটকে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি এই অঞ্চলে আরও সমন্বিত ও বাণিজ্য নেটওয়ার্ক জোরদারে একটি বড় পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, এই উদ্যোগটি কেবল বিদ্যমান বাণিজ্যের গতি বাড়াবে না, বরং ছোট ব্যবসায়ী থেকে বড় রফতানিকারক পর্যন্ত উভয় পক্ষের ব্যবসার জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে।
source : amadershomoy