search the site
নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা দেশের জাহাজগুলো প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছে না

যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা তালিকায় থাকা দেশগুলোর জাহাজ কিংবা পণ্য বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি অরোপ করা হয়েছে। নিষিদ্ধ জাহাজকে বন্দরের কোনো সুবিধা না দেয়ার পাশাপাশি পণ্যের ক্ষেত্রে লোড-আনলোড এবং বোঝাইয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নৌ-অধিদফতর। তবে নিষিদ্ধ জাহাজ এবং পণ্যের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট তালিকা না থাকায় সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।
জানা যায়, এমনিতেই জাতিসংঘসহ যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা দেশগুলোর মালিকানাধীন জাহাজকে জলসীমায় প্রবেশ কিংবা পণ্য পরিবহনের আড়ালে বন্দরের সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে আগে থেকেই কঠোর অবস্থানে ছিলো বাংলাদেশ। গত কয়েক বছর আগে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যন্ত্রপাতি বহনকারী রাশিয়ার জাহাজকেও বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এর মধ্যে ১৫ অক্টোবর নতুন করে চার দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নৌ-অধিদফতর। সাম্প্রতিক সময়ে নিষেধাজ্ঞা থাকা একটি দেশ থেকে কৌশলে জাহাজ এবং পণ্য এসেছে বলে অভিযোগ ওঠায় এই কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম নৌ-বাণিজ্য অধিদফতরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। যারা কার্গো আমদানি করেন বা জাহাজ চার্টার করেন তারা যেন এ ধরনের কার্যক্রমের অনুমতি না পায় সেদিকটা দেখতে হবে।’
চট্টগ্রাম বন্দরেই বছরে ১২ কোটি মেট্রিক টন বাল্ক পণ্য এবং ৩২ লাখের বেশি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করছে। মূলত নিষেধাজ্ঞাবিহীন কূটনীতিক সম্পর্ক থাকা এবং বন্ধু প্রতিম দেশগুলো থেকেই এসব পণ্য আমদানি করা হয়। রফতানিও হয় বৈধ দেশগুলোতে। কিন্তু নৌ-অধিদফতরের সার্কুলারে নিষিদ্ধ জাহাজকে যেমন এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে, তেমনি পণ্যের ক্ষেত্রে উৎপাদন এবং গন্তব্য নিশ্চিত হতে বলা হয়েছে। নির্দেশনা অমান্যকারীদের জরিমানা এবং লাইসেন্স বাতিলের পাশাপাশি কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ার করা হয় বলে জানান বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন।
তিনি বলেন, ‘আগে থেকেই বাংলাদেশ সরকার এ ব্যাপারে সতর্ক ছিল। নতুন করে আবারও সার্কুলার দেয়া হয়েছে। তবে নিষিদ্ধ কোনো দেশ থেকে কখনোই পণ্য এসেছে এমন রেকর্ড নেই।’
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ায় ইতোমধ্যে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে রাশিয়া। আর রাশিয়ার ৬৯টি জাহাজকে আগেই নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তালিকা প্রকাশ করেছিলো আমেরিকা। সেই অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দরও নিষিদ্ধ জাহাজগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছিলো। তবে নতুন করে আর কোনো নিষিদ্ধ জাহাজের তালিকা পায়নি বন্দর। নিষিদ্ধ জাহাজ এবং পণ্যের তালিকা প্রকাশ করা হলেও নির্দেশনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সংকট এড়ানো যায় বলে মনে করছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক।
তিনি বলেন, ‘যে নিষেধাজ্ঞার পত্রটা এসেছে, সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
বছরে চার হাজারের বেশি পণ্যবাহী জাহাজ আসে চট্টগ্রাম বন্দরে। এর মধ্যে বাংলাদেশি মালিকানাধীন জাহাজ রয়েছে মাত্র ১০০টি। বাকি জাহাজগুলো যেমন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নিবন্ধিত, তেমনি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই পরিচালিত হয়ে আসছে।
source : somoynews