search the site
মেরিন ইঞ্জিনিয়ারের খামারবাড়ি দখলচেষ্টা, ডিআইজি’র কাছে অভিযোগ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার জামালের খামারবাড়ি দখলচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী হাজী সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে। খামারবাড়ি দখল করতে গিয়ে বাঁধার সম্মুখীন হলে ২ জনকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ১০ নম্বর সলিমপুর ইউনিয়নের খাজাকালু শাহ্ (রঃ) মাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি’র কাছে অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, যুক্তরাজ্যে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে উচ্চতর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের পর মো. জামাল উদ্দিন দীর্ঘ ৪২ বছর দেশি-বিদেশি জাহাজে চিফ ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরি করেন। চাকরি থেকে অর্জিত অর্থ দিয়ে ৩২ শতক জমি খরিদ করে খামারবাড়ি গড়ে তোলেন। বর্তমানে তার খরিদা করা জায়গাগুলোর দাম শতগুণ বেড়ে গেছে। এতে একই এলাকার প্রভাবশালী হাজী সিরাজ উদ দৌলা সেই জমি দখল করতে উঠেপড়ে লাগে। সেটা সম্ভব না হলে অভিযুক্ত তার সহযোগীর মাধ্যমে জমিগুলো ক্রয় করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু ভুক্তভোগী জমি বিক্রি করার প্রস্তাব প্রত্যাখান করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জমি দখল করার জন্য বার বার দখলচেষ্টা চালায়। দখল করতে না পেরে মিথ্যা মামলা দিয়ে বার বার হেনস্থা করে ভুক্তভোগীকে। জায়গাটি যাতে দখল করতে না পারে সে জন্য ভূমি আপিল ফুল বোর্ড স্থিতি অবস্থা জারি করে। এরপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যা করার হুমকি দেওয়াসহ নির্যাতন বা হামলার চেষ্টা করে। দৌলার এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য ভুক্তভোগী জামাল পুলিশের আইজিপি, ডিআইজি পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ করেন। এবং আদালতেও মামলা বা অভিযোগ দায়ের করে। স্থানীয় আইন-শৃঙ্গলা সংস্থায় বার বার ধর্না দিয়ে দেন জামাল উদ্দিন। কিন্তু অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা না নেওয়ায় তার দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে যায়। ২০২৩ সালের ২৩ সেপ্টম্বর সকাল সাড়ে ১১টায় তার স্ত্রী দিলশাদ আরা বেগম ও তার ছেলে তানজিম খামার বাড়িতে কাজ করার সময় হঠাৎ ১০ থেকে ১২ জন সন্ত্রাসী নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। জামালের স্ত্রীকে শ্লীলনতাহানীর চেষ্টা করে। তার ছেলে অধ্যাপক তানজিম ও তার কেয়ারটেকার মদন মিয়াকে মারধর করে আহত করে। তাদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তার সাঙ্গপাঙ্গরা পালিয়ে যায়। তাদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায়। তাদের চিকিৎসা শেষে জামাল বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আদালতে মামলা করে। আদালত মামলা সীতাকুণ্ড মডেল থানায় পাঠানোর পর দৌলার প্রভাবে পুলিশ মামলাটির সবগুলো ধারার মধ্যে ১টি ধারা ৫০৬ রেখে বাকি ধারাগুলো বাদ দিয়ে আদালতে প্রতিবেদন পাঠায়। কিন্তু বাদী জামাল আদালতে নারাজি দিলে মামলাটি আবারও সীতাকুণ্ড মডেল থানায় পাঠানো হয়। তারপরও একই প্রতিবেদন দিলে জামাল আদালতে আবারও নারাজি আবেদন ও মারধরের ভিডিও ফুটেজ উপস্থাপন করে। তখন আদালত ৫০৬ ধারার সঙ্গে আরও কয়েকটি ধারা সংযোজন করে মামলাটি পূর্ণাঙ্গভাবে বিচারিক আদালত আমলে নেয়। এরপর দৌলা আরও বেপরোয়া হয়ে এখন রীতিমত জামালকেসহ তার পরিবারের সদস্যেদের হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দেয়। এছাড়া ২০২৩ সালে ১১ অক্টোবর অভিযুক্তের নির্দেশে তার সহযোগীরা জামালের খামার থেকে একটি গাভী নিয়ে গেলে থানায় অভিযোগ করা হয়। অপরদিকে ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর জামালকে ভাড়াটে জনৈক নজরুল ইসলাম তার দলবল নিয়ে তাকে মারধর করে। এতে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়।
এদিকে সোমবার (২২ এপ্রিল) নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি’র কাছে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।
ভুক্তভোগী মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. জামাল উদ্দিন বলেন, আমি আলু দৌলার অত্যাচার, নির্যাতন ও হামলার শিকার হয়ে আমার পরিবারের সদস্যেদের নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। তাই প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও ডিআইজির কাছে ঐ ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে আকুল আহবান জানাই।
অভিযুক্ত সিরাজ উদ দৌলাকে মোবাইলে বার বার ফোন দিলেও মোবাইল রিসিভি করেননি। ফলে তার বক্তব্য জানা যায়নি।
SOURCE : ittefaq