search the site
Sajib Mridha (47N) no more….
Sajib Mridha (47N) no more….
With great sadness, we announce the death of Sajib Sudha (47N). He was among the two Bangladeshis aboard the vessel.
He was sailing aboard the Iranian oil tanker Sanchi that has been ablaze off China since January 6 sank on Sunday, causing the Iranian government to give up hope of finding any of the crew alive. The bodies of three people have been recovered, and Iranian officials have now said the remaining 29 are presumed dead. President Hassan Rouhani has sent messages of condolence to the families of the crew and declared a day of national mourning on Monday. An official statement says the day is to honor “the brave mariners who died in the course of their mission to advance the country’s goals and suffered a terrible disaster and joined the martyrs.”
In his remebrance
January 8, 2024 [BDMariners] দোয়া প্রার্থনা
আমাদের মেরিন একাডেমীর ৪৭ তম ব্যাচে স্রষ্টার কাছে প্রথম প্রত্যাবর্তনকারী ক্যাডেট সজীব মৃধা! ২০১৮ সালের ৬ জানুয়ারী এম.টি সানচির দুর্ঘটনায় সজীবসহ সেই জাহাজের সবাই দুনিয়া ছেড়ে পরপারে পাড়ি জমায়। আজ ৬ বছর হয়ে গেছে ওর বিদায়ের।
আমাদের সবাইকেই তো একদিন ফিরতে হবে কিন্তু এত শীঘ্রই এই প্রত্যাবর্তন শুরু হয়ে যাবে কোনদিন কল্পনা করিনি। এমনভাবেই যে শুরু হবে সেটাও ভাবিনি।
নিজেকে সজীবের জায়গায় চিন্তা করতেই মাথা দপদপ করছে। কেমন লেগেছিল তখন ওর? ও কি ঘুমিয়ে ছিল? ডিউটি করছিল? ৫ মিনিটের ব্যবধানেই জাহাজের পুরো পরিবেশটা বদলে গিয়েছিল হয়তো। আগুনের লেলিহান শিখা ফুটে ওঠেছিল হয়তো ওদের সবার চোখে। ভয়ে আতংকে সজীবের কার কথা মনে পড়েছিল কে জানে। হয়তো জনমদুখিনী মায়ের কথা, প্রিয় বাবার কথা, ভালোবাসার বোনের কথা। হয়তো ওর দু’চোখ ভিজে গিয়েছিল সবার কথা ভেবে। নিষ্ঠুর পৃথিবী চরম নিষ্ঠুরভাবে বিদায় দিলো ওদের সবাইকে। ওপরে আগুনের হাজার ডিগ্রী টেম্পারেচার আর নিচে বরফঠান্ডা পানি! কি করবে বুঝে উঠতে না উঠতেই হয়তো কালো ধোঁয়া ঘিরে ফেলেছিল।
একাডেমী থেকে পাসিং আউটের পর সজীবের সাথে আমার একবার মাত্র দেখা হয়েছিল, সেটা ২০১৭ তে। মতিঝিলে প্রায় ৫ বছর পর দেখা হয়েছিল আমাদের, তখন জানতাম না যে সেটা শেষ দেখা! দুজনেই সেদিন যার যার কাজে ব্যস্ত থাকায় বেশিক্ষণ কথা হয়নি। এখন সজীবের আর কোন ব্যস্ততা নেই। ওর অখণ্ড অবসর! ও চিরশান্তির আবাসে চলে গেছে। হয়তো আমাদের জীবনের ব্যস্ততা দেখছে আর হাসছে। জীবন নিয়ে আমাদের কত পরিকল্পনা, ভাবনা, দুশ্চিন্তা! অথচ সবই অনিশ্চিত! মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও আমরা অনিশ্চয়তার পিছনে ছুটে চলি আমৃত্যু।
আল্লাহর লীলা বোঝার মত জ্ঞানবুদ্ধি আমার নেই। কিন্তু সজীবের বাবা-মাকে আল্লাহ এ কোন আযাবে ফেললেন তিনিই ভালো জানেন! একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে তারা হয়তো দুনিয়াতেই দোজখের যন্ত্রণা ভোগ করবেন যতদিন বেঁচে থাকবেন। ছেলেকে বুকে-পিঠে করে মানুষ করেছেন, দেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে পড়িয়েছেন। যে বাবা-মার চোখে আনন্দঅশ্রু ছিল ছেলে মেরিন একাডেমীতে চান্স পাবার পর আজ তারাই হয়তো আফসোস করছেন ওকে অন্য কোথাও ভর্তি না করে। হয়তো ভাবছেন সজীব অমানুষ হলেও ভালো হতো। অন্তত এভাবে এতো কষ্ট পেয়ে তো চলে যেত না। শুনেছি মানুষের জন্ম-মৃত্যু পূর্বনির্ধারিত। হয়তো সবার ভাগ্যই সবাইকে তার নির্ধারিত গন্তব্যে নিয়ে যায়।
জাহাজে যাবার সময় সজীবের কি ভুলেও মনে হয়েছিল আর দেখা হবেনা দেশকে, দেশে ফেলে যাওয়া প্রিয় মানুষদেরকে? জুনিয়র র্যাংকে জয়েনিং টিকেট কনফার্ম হলে বর্তমান সময়ানুযায়ী তা কতটা আনন্দের তা শুধু আমরাই জানি। ওর সেই বহু আকাঙ্ক্ষিত ফ্লাইটের টিকিট যে ওকে পরপারে পৌঁছানোর ঠিকানায় নিয়ে যাচ্ছে যদি সজীব জানত! আমি নিজেও নিয়ে এসেছি কিনা কে জানে! আমাদের সবারই রিটার্ন টিকেট বুক করা আছে। যার যার নির্ধারিত সময়ে তার তার হাতে উপরওয়ালা ঠিক পৌঁছে দিবেন।
আল্লাহ সজীবসহ এম. টি সানচিতে নিহত সকলকে জান্নাতবাসী করুন। সজীবের মতো আমার আরেক ব্যাচমেট হাদিসও আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছিল মিসাইল হামলায়। আর কারো ভাগ্যে যেন এমনটা না ঘটে আল্লাহ কাছে সর্বদা এই প্রার্থনাই করি। নিরাপদে থাকুক আমাদের পৃথিবী… নিরাপদে থাকুক পৃথিবীর সকল প্রাণি….
সজীব, হাদিস, ওয়াহিদ তোরা কি পৃথিবীতে ফেলে আসা নিজেদের গল্পগুলো শুনতে শুনতে বোর হয়ে গেছিস? মিস করছিস আমাদের? তোরা একদম মন খারাপ করিস না, আমরাও এক এক করে আসছি খুব শীঘ্রই…
“নিশ্চয়ই আমরা সবাই তারই জন্য এবং তারই দিকে ফিরে যাব….”
আমার পরলোকগত ব্যাচমেটদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে সবার দোয়া প্রার্থনা করছি। আল্লাহ যেন ওদের সবাইকে ক্ষমা করে জান্নাতুল ফেরদৌস নসীব করেন-আমীন।
বিনীত,
আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (৪৭/ই)
Clipping from his facebook