ক্যাডেট তৈরির নামে চলছে প্রতারণা

Comments Off on ক্যাডেট তৈরির নামে চলছে প্রতারণা

বিদেশী জাহাজে মোটা অংকের বেতনে চাকরি, রোমাঞ্চকর সামুদ্রিক ও জীবন- এমনই বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মেরিন ক্যাডেট তৈরির নামে প্রতারণা করছে দেশের বিভিন্ন বেসরকারি মেরিন ইন্সটিটিউট। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাজীবন শুরুর পর থেকেই পদে পদে প্রতারণার শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। মাত্র তিন বছরের কোর্সের জন্য ১৫ থেকে ২৫ লাখ টাকা নেয়া হলেও বেশিরভাগ ইন্সটিটিউটে নেই শিক্ষার ন্যূনতম পরিবেশ। কোর্স শেষে মেলে না প্রত্যাশিত চাকরি, উল্টো জাল কাগজপত্র বানিয়ে বিদেশী জাহাজে প্রশিক্ষণের জন্য শিক্ষার্থী পাঠানোর ঘটনা ঘটছে। এ প্রক্রিয়ায় বিদেশ গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী। শুধু তাই নয়, লাখ লাখ টাকা নেয়ার পরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে জাল সার্টিফিকেট দেয়ার প্রমাণ মিলেছে। সংশ্লিষ্ট নথিপত্র পর্যালোচনা ও যুগান্তরের অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে কয়েকটি বেসরকারি ইন্সটিটিউটের প্রতারণার এমন সব চিত্র।

বেসরকারি মেরিন ইন্সটিটিউট ও মেনিং এজেন্টগুলোর নানামুখী প্রতারণায় আন্তর্জাতিক বাজারে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে দেশের সুনাম। বিদেশী জাহাজ কোম্পানিগুলো বাংলাদেশী নাবিকদের নিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। বিপুলসংখ্যক নাবিক বেকার জীবন-যাপন করছেন। প্রতারণার কারণে সিঙ্গাপুর, দুবাই, সৌদি আরব, কুয়েত, মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ বাংলাদেশী নাবিকদের সহসা ভিসা দিচ্ছে না। ফলে অনেকে নিয়োগপত্র পেয়েও জাহাজে যোগ দিতে পারেন না। ফলে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) সাদা তালিকা থেকে বাংলাদেশের সদস্যপদ বাদ পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, দেশের ১৭টি বেসরকারি মেরিন ইন্সটিটিউটের বেশিরভাগে নৌ মন্ত্রণালয় ও নৌ পরিবহন অধিদফতরের কয়েক কর্মকর্তার বেনামে অংশীদারিত্ব রয়েছে। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো অনিয়ম-দুর্নীতি করার পরও নির্বিঘ্নে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে নৌ মন্ত্রণালয়ের সচিব অশোক মাধব রায় বলেন, মেরিন ইন্সটিটিউটগুলোর শিক্ষার পরিবেশ ও কার্যক্রম পরিদর্শনে একটি শক্তিশালী কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশের আলোকে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। যেগুলোর অবস্থা বেশি খারাপ সেগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে। কিছু প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করা হবে।

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও নৌ পরিবহন অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সারা দেশে ১৭টি বেসরকারি মেরিন ইন্সটিটিউট চালু রয়েছে। এর মধ্যে দু’তিনটি ছাড়া বাকিগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক। একজন শিক্ষক আছে এমনও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান কাগজে-কলমে থাকলেও বাস্তবে কার্যক্রম নেই। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে তিন বছর মেয়াদি ক্যাডেট কোর্স ও সর্বোচ্চ ছয় মাস মেয়াদি বিভিন্ন প্রি-সি শর্ট কোর্স (রেটিং) করানো হয়। ক্যাডেট কোর্সে দুই বছর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও এক বছর সমুদ্রগামী জাহাজে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ক্যাডেটদের এক বছরের জন্য জাহাজে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার বিধান রয়েছে। জানা গেছে, এসব নির্দেশনা মানছে না বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে অন্যতম রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আদাবরে অবস্থিত শাহ্ মেরিন অ্যান্ড বিজনেস ইন্সটিটিউট। এই প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ শিক্ষার্থীকে গত বছর জাল সনদে ভারতে পাঠানো হয়। সেখানে যাওয়ার পর বিষয়টি ধরা পড়লে ওই পাঁচ শিক্ষার্থী ভারতে বাংলাদেশের দূতাবাসের মাধ্যমে দেশে ফিরে আসেন। তাদের কাছ থেকে মোবাইল, ল্যাপটপ, পাসপোর্টসহ সব রেখে দেয় ভারতীয় দালালরা। পাঁচ শিক্ষার্থী হচ্ছেন- মো. কামরুল হাসান, মোহাম্মদ আবদুল মামুন, মো. সোহেল রানা, আবদুল্লাহ আল মামুন ও সৈকত বাগচী শুভ্র। ওই ঘটনার সত্যতা পেয়েছে নৌ পরিবহন অধিদফতর গঠিত তদন্ত কমিটি।

ভুক্তভোগী কামরুল হাসান জবানবন্দিতে কমিটিকে জানিয়েছেন, শাহ্ মেরিন অ্যান্ড বিজনেস ইন্সটিটিউটের দ্বিতীয় ব্যাচে দুই বছর মেয়াদি ডেক শাখায় প্রি-সি কোর্সের জন্য সবমিলে ২২ লাখের বেশি টাকা শোধ করছেন। জাহাজে উঠার জন্য ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন শাহ্ মেরিন রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে আরও ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা শোধ করেন। কলকাতা থেকে দিল্লি যাওয়ার ভাড়াও দেন। ভারতে পৌঁছলে শাহ মেরিন রিক্রুটিং এজেন্সির দালাল রাহুল শর্মা তার পাসপোর্ট, সিডিসি ও অন্যন্য ডকুমেন্ট রেখে দেন। তাকে ভারতীয় নাগরিকের জাল আইডি ও ভারতীয় জাল শর্ট কোর্সের সনদ দিয়ে রাধা কৃঞ্চ-৩ নামের জাহাজে উঠানো হয় এবং মুরিংম্যান ও অর্ডিনারি সি-ম্যানদের মতো জাহাজ পরিষ্কারের কাজে লাগানো হয়। কিন্তু কামরুল ইসলাম ভারতীয় নাগরিক নন- বিষয়টি জানার পর ওই জাহাজের মাস্টার তাকে নামিয়ে দেন। পরে ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসের মাধ্যমে ফেরত আসেন এ ক্যাডেট।

প্রতারণার শিকার আরেক শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আবদুল মামুন জানান, একই প্রক্রিয়ায় তাকে গুজরাটের কান্দলা বন্দরের ভারতীয় নাগরিকের জাল আইডি ও ভারতীয় জাল শর্ট কোর্স সনদ দিয়ে একটি বার্জে উঠানো হয়। কোনো পদ না থাকায় তাকে টয়লেট পরিষ্কারের কাজ করতে হয়। বার্জে ওঠানোর আগে তার পাসপোর্ট, সিডিসি, ল্যাপটপ ও মোবাইলসহ অন্যান্য ডকুমেন্ট নিয়ে যায় ভারতীয় দালাল।

একই প্রতিষ্ঠানের আরও তিন শিক্ষার্থীর জবানবন্দিতেও প্রতারণার নানা বিষয় উঠে এসেছে তদন্ত কমিটির রিপোর্টে। এতে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কখনও অস্তিত্ববিহীন জাহাজ, কখনও স্ক্র্যাপ জাহাজ, কখনও ভারতের অভ্যন্তরীণ কোস্টাল জাহাজ বা বার্জে জালিয়াতি করে কাগজ-কলমে সি-টাইম দেখানো হয়েছে। এছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে প্রশিক্ষণে যাওয়া বেশকিছু শিক্ষার্থী ফিরে আসেনি। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল, জামানত বাজেয়াফত এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেছে কমিটি। তবে, তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটিকে শোকজ করা হলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানা গেছে।

পাঁচ শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রতারণার বিষয়টি ‘দুর্ঘটনা’ হিসেবে দাবি করেছেন শাহ্ মেরিন অ্যান্ড বিজনেস ইন্সটিটিউটের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাহ্ মোমিনুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, ওই ঘটনা একটি এক্সিডেন্ট। আমরা ব্যবসা করার জন্য প্রতিষ্ঠান খুলেছি, প্রতারণা করার জন্য নয়।

২০১৫ সালে একই ধরনের প্রতারণা করেছিল ওয়েস্টওয়ে মেরিন একাডেমি এবং ওই প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ম্যানিং এজেন্ট। তৎকালীন সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর ও শিপিং অফিসের কাগজপত্র জাল করে ওই প্রতিষ্ঠানের নামে ১৯ জন নাবিককে ভারতে পাঠানো হয়। পরে মুম্বাই পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে নৌ অধিদফতরের অপর এক প্রতিবেদনে। ওয়েস্টওয়ে মেরিন একাডেমির লাইসেন্স বাতিল করেছে নৌ পরিবহন অধিদফতর।

প্রতারণা এখানেই শেষ নয়, বেশ কয়েকটি মেরিন একাডেমি টাকার বিনিময়ে জাল সার্টিফিকেট বিক্রি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আটলান্টিক মেরিটাইম ট্রেনিং ইন্সটিটিউ এবং ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ট্রেনিং একাডেমি থেকে দেয়া সনদ জাল প্রমাণ পেয়েছে সংস্থাটির কর্মকর্তারা। ওই সব সার্টিফিকেট তাৎক্ষণিক জব্দ করা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সনদধারীরা জানান, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তারা এ সার্টিফিকেট পেয়েছেন। তবে, বিস্তারিত জানতে চাইলে তারা সটকে পড়েন। এ বিষয়ে আটলান্টিক মেরিটাইম ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, বাইরের লোকেরা জাল করে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সার্টিফিকেট জালিয়াতি করে প্রিন্ট করছে। নৌ পরিবহন অধিদফতরে থাকা ইন্টারন্যাশনাল ট্রেনিং একাডেমিতে ফোন করে কাউকে পাওয়া যায়নি। নৌ পরিবহন অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের বিপুলসংখ্যক জাল সার্টিফিকেট জব্দ করেছেন তারা।

বেসরকারি মেরিন একাডেমি নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা নৌ পরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর এম জাকিউর রহমান ভূঁইয়া যুগান্তরকে বলেন, প্রতারণার কারণে ওয়েস্টওয়ে মেরিন একাডেমি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শাহ্ মেরিন অ্যান্ড বিজনেস ইন্সটিটিউটকে শোকজ করা হয়েছে। তবে, প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে মামল করা হয়নি। তিনি বলেন, শিক্ষার মান ভালো না থাকায় ৪টি প্রতিষ্ঠান বাতিলের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাকিগুলো পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

শিক্ষার ন্যূনতম পরিবেশ নেই : জানা গেছে, ১৭টি প্রতিষ্ঠানের দু’তিনটি ছাড়া বাকিগুলো নৌ মন্ত্রণালয়ের গাইডলাইন অনুযায়ী শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি। এর মধ্যে একটি এশিয়ান মেরিটাইম একাডেমি। ২০১২ সালের ২৫ জুলাই মোছা. শারমিন আক্তারের নামে অনুমোদন পাওয়া এ প্রতিষ্ঠানটির দুই দফায় মালিকানা বদল হয়েছে। ক্যাম্পাসের আকার ৩০ হাজার বর্গফুট হওয়ার কথা থাকলেও এ প্রতিষ্ঠানের রয়েছে ৫ হাজার ৪০০ বর্গফুট। চারটি ছোট আকারের ক্লাসরুম থাকলেও সেখানে মাল্টিমিডিয়া ও কম্পিউটার নেই। এছাড়া কম্পিউটার ল্যাব, ওয়ার্কশপ, ফায়ার ফাইটিং ট্রেনিং সুবিধা, ল্যাংগুয়েজ ল্যাবসহ অন্যান্য সুবিধাও নেই। এশিয়ান মেরিটাইম একাডেমি থেকে এ পর্যন্ত দুটি ব্যাচে ৬৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হলেও কাউকে জাহাজে যোগ দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়নি।

আরেক প্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক মেরিটাইম একাডেমির ক্যাম্পাস উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর রোডের ৫০ নম্বর বাড়িতে থাকার কথা থাকলেও সেখানে কোনো ক্যাম্পাস নেই। প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষের দাবি, একই সেক্টরের ১৩ নম্বর রোডের ৪৪ নম্বর বাড়িতে ক্যাম্পাস স্থাপন করা হয়েছে। ওই ঠিকানায় পাঁচতলা আবাসিক ভবনে ১০ হাজার বর্গফুট ফ্লোর স্পেসে ক্যাম্পাস পরিচালনা করা হচ্ছে। ওই প্রতিষ্ঠানে কোনো কম্পিউটার ল্যাব, অগ্নিনির্বাপক প্রশিক্ষণ যন্ত্রপাতি, সার্ভাইভাল ট্রেনিং যন্ত্রপাতি, ল্যাংগুয়েজ ক্লাব, লাইব্রেরি, অডিটরিয়াম, বিনোদন রুম, প্যারেড গ্রাউন্ড নেই। দুই বছরে ১৬ জন ক্যাডেট পাস করলেও কাউকে জাহাজে উঠাতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। ইউএস-বাংলা মেরিন একাডেমি নামে এটির অনুমোদন নেয়া হলেও পরে নাম ও মালিকানা পরিবর্তন করা হয়। এ বিষয়ে প্যাসিফিক মেরিটাইম একাডেমির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মারুফ মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, প্রশাসনিক জটিলতায় সিডিসি পেতে দেরি হয়েছে। তাদের জাহাজে উঠার সময় এখনও আসেনি। একাডেমিক অবকাঠামো সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য সময় নির্ধারণ করা আছে। ওই সময় এখনও শেষ হয়নি। এ ছাড়া আরও কিছু প্রতিষ্ঠান শিক্ষার ন্যূনতম মান রক্ষা করতে পারেনি। এরমধ্যে রয়েছে- মেরিনা একাডেমি, মেরিটাইম ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, বে মেরিটাইম একাডেমি, শাহ্ মেরিন অ্যান্ড বিজনেস ইন্সটিটিউট, ন্যাশনাল মেরিন একাডেমি অব বাংলাদেশ, ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ট্রেনিং একাডেমি, মাস মেরিটাইম একাডেমি ও আটলান্টিক মেরিটাইম একাডেমি।

Source: Jugantor

Comments are closed.