Some correspondence regarding the future of the marine profession in Bangladesh

Comments Off on Some correspondence regarding the future of the marine profession in Bangladesh

প্রিয় শামসুল এ খাঁন (৩১ ) ,

 

সকলের অনুভূতিকে নাড়া দেয়ার নিমিত্তে তোমার এই প্রচেষ্টা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার । নাড়া দিতে থাকো ভাইয়া  , জনতা একদিন  অবশ্যই জাগবে।

 

এখন আমাদের অবস্থা হয়েছে – সর্বাঙ্গে ব্যাথা ,ওষুধ লাগাবো কোথায় ? বাড়িতে রিলিফের বস্তা পৌঁছার আগেই তৃতীয় বিয়ের পয়গাম নিয়ে ঘটক ব্যাটা হাজির হয়ে গেছে ।  কোনরূপ বিচার বিবেচনা না করে মহা উৎসাহে আমরা জনসংখ্যা বাড়িয়ে ফেলেছি । এখন প্রকৃতির নিজস্ব উপায়ে এই অবিবেচক কাজের একটা সমাধান টানার উপরেই মূলত: আমাদের  নির্ভর করতে হবে । মেরিন প্রফেশনের যে স্থায়ী ক্ষতিটি হয়ে গেলো , তা আর কখনই পূরণ হবে না ।  প্রকৃতির সমাধান এভাবেই হয় ।

 

বর্তমান  পরিস্থিতি থেকে আমাদের উদ্ধারের নিমিত্তে আমাদের যে কয় জন মহৎ প্রাণ এগিয়ে এসেছেন , তাদেরকে নিরুৎসাহিত করতে  চাচ্ছি না । বরং তাদের উপর আমাদের প্রত্যাশার চাপটি যেন মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে না যায় , সেজন্যেই এটা লিখছি ।

নাইজেরিয়া থেকে চার জন ভাইকে উদ্ধার করে তারা  আমাদের প্রত্যাশা অনেক বাড়িয়ে ফেলেছেন ।  তারপরেও আমাদের সার্বিক সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে একটু জানা থাকলে আখেরে ভালো হবে ।

 

ভাই শামসুল এ খাঁন , কালো টাকা বিনিয়োগের যে প্রস্তাব রেখেছো সেটার নৈতিক ( দুর্নীতিকে উৎসাহিত করন ) দিক বিবেচনার অবকাশ আমাদের আসলেই কমে গেছে । যদিও সার্বিক বিবেচনায় আমাদের এই সেক্টরের ভাগ্যে সেই সুযোগটি কখনই জুটবে  না । কাজেই আসো , অন্তত:  সমাজের একটা জায়গা থেকে নৈতিকতার একটা দ্বীপ প্রজ্বলিত করে রাখি । এক রাতের জন্যে এক মিলিয়ন ডলারের ‘ইনডিসেন্ট প্রপোজাল’ পেলেও নিজের প্রেয়সীকে নিরাপদ রাখি , ‘এক রাত তেমন কিছু না ‘- মনকে এই ধরনের  সর্বনাশা প্রবোদ থেকে বিরত রাখি ।  মিলিয়ন ডলার অন্যভাবেও আসতে পারে , সেই রাস্তা খুঁজে ফিরি ।

আর তুমি যে মেরিটাইম পররাষ্ট্র নীতি সম্পর্কে বলেছো সেটা বলতে তেমন  কিছু নেই । একটা রাষ্ট্রের সার্বিক পররাষ্ট্র নীতি থেকে তার মেরিটাইম অংশ কখনই আলাদা হয় না ।  কাজেই এ বেলায় ‘Cut your coat according to your cloth ‘বিবেচনা করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে । তবে  এখানে যতটুকু কাপড় আছে , তার সর্বোচ্চ ব্যবহার হচ্ছে কি না তা দেখা যেতে পারে ।

 

আমরা পলিটিক্স কে ছাড়তে পারি কিন্তু পলিটিক্স কখনই আমাদেরকে ছাড়ে না । একটি দেশের রাজনীতিই তার পররাষ্ট্র নীতির গতিবিধি নির্ধারণ করে । আমরা সবাই মিষ্টি মিষ্টি ফল খেতে চাই , কিন্তু কেউ গাছ লাগাতে চাই না । টিকেট কাটি থার্ড ক্লাসের , ভ্রমণ করতে চাই ফার্ষ্ট ক্লাসে ।

দেশরূপ জাহাজটির জন্যে একদল দক্ষ , যোগ্য ও মেধাবী নেভিগেটর তৈরি হোক সেধরনের চেষ্টা কেউ করি না ।  রংবাজ তৈরির বিশ্ববিদ্যালয়ের অভাব নেই , তবে  এই ধরনের নেভিগেটর তৈরির একাডেমি কেউ বানাতে চাই না । আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক ফ্যাশন আমাদেরকে এই সব কাজে উৎসাহ জোগায় না ।  আমরা কেউ রুট কজ এনালাইসিসে যেতে চাই না । ভালো নেভিগেটর তৈরি না করেই  সেই জাহাজে নিরাপদে ভ্রমণ করার স্বপ্ন দেখি   । সত্যিই আজব আমাদের এই চাওয়া ।

 

ছোট ভাই শামসুল এ খাঁন , মনে কষ্ট নিও না । তোমার মনের কষ্ট কমাতেই আসলে এই কয়টি কথা লিখে ফেলেছি । ভালো থেকো , সুন্দর থেকো।

– মিনার রশীদ ( ২১)

 
Sent from my iPhone
On 22 May 2016, at 8:25 am, Shamsul Alam Khan <[email protected]> wrote:

Dear Shaheen Khan,

As-Salamualaikum.

Thank you very much for your reply on this mail.

Regret to inform you that till today I was little bit confused and feeling really uncomfortable writing these proposals about the development of our “Maritime Needs” in this group, as 4 days have been passed & I never received any reply from non of our respected honourable seniors/juniors or even any of my batch mates. I was thinking, may be I am completely wrong on my proposals which I have made in this forum, otherwise I might have been receiving a single reply from anyone.

However, respected Zillur Sir (11N) has informed me in a personal email about the development progress planned for the various issues & later I have called him to understand the same. He also confirmed me that he will write his thoughts about all proposals in details in this forum & reply my mail as well soonest possible. I believe on his extraordinary leadership quality by which he is leading the BMMOA and I have complete faith on him that, In Shaa Allah we will be able to solve all crisis on our maritime sector if he takes the keen interest and we all seniors and juniors assist and support him as and when it is  required.

Again from Ashraf Ibn Noor (5 BD) Sir, I understand about the present complexity running between BMA & BSMRMU for solving the issues related Higher studies on Maritime Education. If this problem is solved, then really, thousands of mariners life will be dramatically changed, specially for our unemployed junior officers and cadets. Please Sir, do your best to solve the same ASAP, so that our Juniors can get the fruits of BSMRMU for whom that has been established for.

I hope and believe, if all of us remain united & able to avoid politics and groupings between each others then we can surely improve our maritime nations.

Thanks and Regards –

Shamsul A Khan (31st BMA – N)

——————————————————-
Dear Shamsul (Ranjan),
Much appreciated for your efforts and time given to share following good concerns, intense thought, proposal to aid currently ongoing crisis/issues in marine sector whereas we don’t know how much possibility your proposal would be considered near future . In writing it’s clearly shown how much you empathize about our jobless, stressful and exhausted juniors’ at current situation. It was very unpleasant when I have seen those pity juniors been sharing their undergoing  pain, distress and hardship experience on your above subject Facebook post.
I hope and wish all issues will be addressed to our respective authorities to resolve gradually.
In addition, I guess your 2nd proposal idea really good that another popular way to convert black money to white if this practicable in BD for marine industry.
Very pleased to see Ashraf Ibn Noor sir for his continuing great contribution on Maritime Education and others.
Finally , Zillur sir 11th and Baten sir 18th  has shown their remarkable leadership and wonderful  job done to get free 4 seafarers from Nigeria jail, beside sincere thanks to all mariners to become unity and support. I presume this exceptional sweet memory will make us more strength to overcome all sorts of issues/crisis.

Best Wishes
Shaheen Khan. 31E (London)

________________________________
From: Shamsul Alam Khan <[email protected]>
To: [email protected]
Cc: Baten M.A. <[email protected]>
Sent: Tuesday, 17 May 2016, 23:50
Subject: [BDMariners] বাংলাদেশের মেরিটাইম সেক্টরের অত্যাবশ্যকীয় উন্নয়নের জন্য ৩টি অতীব জরুরী প্রস্তাবনা এবং আলোচনার আহ্বান

সন্মানিত সকল বাংলাদেশী মেরিনারবৃন্দ,

আসসালামুয়ালাইকুম এবং সকলের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা। আশা করছি যে যেখানেই রয়েছেন, সকলেই কুশলে রয়েছেন।

প্রাসঙ্গিক আলোচনাতে আসার আগে কিছুটা অবতারনা দরকার। আমার এর আগের লেখাটিতে (৮ইমে’২০১৬ প্রকাশিত) আমি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ মেরিটাইম এডুকেশন সিস্টেম এর পরিবর্তনের উপরে এবং বাংলাদেশী নাবিকদের ভিসা সমস্যার উপরে কিছু আলোচনার সূত্রপাত ঘটিয়েছিলাম এবং আশা করেছিলাম দেশ বিদেশে বসবাসরত আমাদের মেরিটাইম কমিউনিটির পথ প্রদর্শক, কান্ডারি অনেকেই বিষয়দুটির উপরে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে দৃষ্টিপাত করবেন এবং বাংলাদেশী মেরিনারদের এই গ্লোবাল প্লাটফর্মে আলাপ আলোচনা সাপেক্ষে একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে সরকারের সর্বচ্চ কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বিষয়টিকে উপস্থাপন করাবার একটা প্রয়াস চালাবেন। কিন্তু অতীব দুঃখের সাথে জানাতে বাধ্য হচ্ছি যে, আমাদের মাঝে বিষয়টি এখনও তেমন একটা গুরুত্ব পাচ্ছেনা কিংবা আমাদের মাঝে আমাদের বিবেককে বিষয়টি এখনও সেভাবে নাড়া দিতে পারছেনা। অথচ আমাদের দেশের সরকারী এবং বেসরকারি বিভিন্ন একাডেমী থেকে পাশ করে এত শত শত জুনিয়ার অফিসার এবং ক্যাডেটরা অনেকেই বেকার হয়ে বসে আছে। আজকেও একাডেমী থেকে পাশ করা একজন জুনিয়ারের (৪৭ ব্যাচের – নাম প্রকাশ করছিনা) এমন হৃদয় বিদারক ইমেইল পেলাম ইনবক্সে, যে নিজেকে ধাতস্থ করতে অনেকটা বেগ পেতে হয়েছিলো। চাকুরী চেয়ে ও নিজের সবটুকুন আত্মসন্মানবোধ বিসর্জন দিয়ে, নিজের পরিবারের অতিগোপোনীয় বিষয়আশয় সবাইকে জানিয়ে, নিজের দুর্বলতা কিংবা আর্থিক অসুবিধা বুঝিয়ে, চাকুরী পাবার জন্য কতটাই না ছোট করেছে নিজেকে! নিজেকে আমার খুব অসহায় মনে হলো ওর ইমেইল পড়ে। আমাদের কি কারোরই ওর ইমেইল পড়ে বিবেক সামান্য নাড়া দিয়ে যায়নি? ও লিখেছে ৩য় শ্রেনীর সনদ পাবার পর থেকে এই ৯-১০ মাসে ও অনেক সিনিয়ার মেরিন ক্যাপ্টেন/চীফ ইঞ্জিনিয়ারের কাছে, দেশী/বিদেশী ৩০০টার উপরে ম্যানিং এজেন্টের কাছে ইমেইল দিয়ে চাকুরী চেয়েছে। ম্যানিং এজেন্ট না হয় ঠিকাছে, কিন্তু আমরা যারা সেইলিং অফিসার/ইঞ্জিনিয়ার, আমাদের হাতে কি আর সেই সুযোগ বা ক্ষমতা রয়েছে, যে আমরা ওকে চাকুরী দিতে পারবো? ২০০৭-২০০৮ সাল হলেও একটা সুযোগ ছিলো। তখন চীফ অফিসার হিসেবেও আমি সহ আমাদের অনেক ব্যাচমেট ম্যানিং এজেন্সীগুলোকে শর্ত জুড়ে দিয়ে সংগে করে একাডেমী থেকে পাশ করা ক্যাডেট নিয়ে যেতে পেরেছি নামকরা বিদেশী প্রিন্সিপ্যালের কম্পানীতেও। কারন তখন সেরকম ডিমান্ড ছিলো জবের। কিন্তু এখনতো বাস্তবতা সম্পূর্ণই ভিন্ন। এরকম শর্ত ম্যানিং এজেন্সীকে দেয়াতো দুরের কথা ইদানিং সিনিয়ার র‍্যাংকেও রয়েছে চাকুরীর সল্পতা। বিশেষত বাল্ক এবং জেনারেল কার্গো শীপের যেনো ধস নেমেছে।  আমার পরিচিত একজন সিনিয়র অফিসার প্রায় ১২ মাস ধরে বসে আছে। দীর্ঘদিন চীফ অফিসার হিসেবে চাকুরী করে এখন প্রথম শ্রেনীর সনদ হাতে নিয়েও সে চীফ অফিসার হিসেবেই জয়েন করতে পারছেনা শীপে। কারন বিশ্বজুড়েই শীপের সংখ্যা কমে গিয়েছে অসম্ভব হারে, সংগে চাকুরীও।

যাহোক, প্রাসঙ্গিক আলোচনাতে আসা যাক। আমাদের মেরিটাইম সেক্টরের উন্নয়নের জন্য আমার কিছু প্রস্তাবনা আমার এই লেখার মাধ্যমে আমি এখানে তুলে ধরলাম। আশা করছি আমাদের সিনিয়ার, ব্যাচমেট জুনিয়ার সকলেই গঠনমূলক আলোচনা করে বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ঠ করতিপক্ষকে একটা কমিটির মাধ্যমে অবহিত করবে। এই কমিটি গঠন করে দেবার জন্য আমি আমাদের BMMOA, JMAA, NI, ImERST, সিংগাপুর, ইউকে, ইউ এস এ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, মালয়শিয়া, হংকং সহ অন্য সকল ওভারসিস মেরিনার্স গ্রুপ রয়েছে, তাদের সবাইকেই কে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাই।

প্রস্তাবনা ) মেরিটাইম শিক্ষা ব্যাবস্থা –  

আগেই বলেছিলাম ৪ বছরের মেরিটাইম সাইন্স অনার্স কোর্সের কথা। এই প্রসঙ্গে আমাদের বাংলাদেশ মেরিন একাডেমীর সন্মানিত কমান্ডেন্ট নৌ প্রকৌশলী ডঃ সাজিদ হুসেইন স্যারের সংগে উনার ফেসবুকের একটা পোষ্টে আমার আলোচনা হয়েছে, যেখানে উনি লিখেছেন যে এই বছরের জানুয়ারী থেকেই বাংলাদেশ মেরিন একাডেমী ৪ বছরের বি এম এস (অনার্স) ডিগ্রি চালু করছে একাডেমীতে অধ্যায়নরত ক্যাডেটদের জন্য এবং সুইডেনের ওয়ার্ড মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির ১৪ মাস মেয়াদী এম এস সি ডিগ্রি শুরু করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং কিছুদিনের মধ্যেই তা আলোচনা সাপেক্ষে সম্পন্ন হবে। এছাড়ও ১ম ব্যাচ থেকে ৫০ তম ব্যাচের সবাইকেই বি এম এস ডিগ্রি দেবার জন্যও একাডেমী করতিপক্ষ কাজ করে যাচ্ছে। এতে করে আমাদের অন্তত সরকারী পর্যায়ের একডেমীগুলোতে মেরিন শিক্ষার একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আসছে, সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বেসরকারী এতগুলো মেরিন একাডেমী এবং প্রস্তাবিত সরকারী ৪টি নতুন একাডেমী তাহলে কিভাবে এই ৪ বছর মেয়াদী বি এস সি (অনার্স ) ইন মেরিটাইম সাইন্স শিক্ষা ব্যাবস্থার সংগে একীভূত হতে পারবে? আর সেক্ষেত্রে আমাদের দেশের সরকারের যথাযথ করতিপক্ষকে বেসরকারী একাডেমীর পাঠক্রম নীতিমালাকে অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। তাছাড়া মেরিন শিক্ষাতে চরম বৈষম্য এসে যাবে সরকারী এবং বেসরকারী ভিন্ন ভিন্ন ব্যবস্থাপনায়। সরকারী নতুন ৪ টি (প্রক্রিয়াধীন) এবং বেসরকারী একাডেমীগুলোকে তো আর সুইডেন এর ওয়ার্ল্ড মেরিটাইম একাডেমীর ব্রাঞ্চ বা শাখাতে রুপান্তর করা সম্ভব নয়। তাহলে কি দেশের একমাত্র মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির অন্তর্ভুক্তি করা সম্ভব এসব প্রাইভেট এবং নতুন করে যেসব সরকারী মেরিন একাডেমী হবে তাদেরকে?  এছাড়াও, বেসরকারী একাডেমীর অনেকগুলোতেই অবকাঠামোগত অনেক সল্পতাও থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এই বিষয়ে আমার মনে হয় আমাদের বিস্তারিত আলোচনা করা উচিত। এছাড়া তাড়াহুড়ো করে অপরিকল্পিত ভাবে যেভাবে ক্যাডেট সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়ে এবং একের পর এক প্রাইভেট মেরিন একাডেমী সৃষ্টি করে যেভাবে আমাদের প্রোফেশনের সর্বনাশ করা হয়েছে, ঠিক একই রকমের আরেকটা সর্বনাশ হবে যদি মেরিটাইম শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষম্যতা তৈরি হয় আমাদের মাঝে।

প্রস্তাবনা ) মেরিটাইম সেক্টরে নতুন বিনিয়োগ –  

প্রতিবার সরকারের বাজেট প্রকাশের আগে এবং রিহ্যাব আবাসন মেলার প্রাক্বালে কালো টাকা সাদা করার জন্য বাংলাদেশে রিহ্যাব কমিটি সরকারকে এমন একটি প্রস্তাবনা করে থাকে যে, ব্যাক্তি বিশেষে কেউ যদি এই কালো টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট কিংবা প্লট ক্রয় করে, তাহলে তার এই কালো টাকার অর্থ আয়ের উৎস সম্পর্কে সরকারের রাজস্ব বিভাগ তাকে কখনওই কোনো প্রশ্ন করবেনা, যদিও সরকারের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রশ্ন করার অধিকার এখনও রয়ে গিয়েছে এবং রিহ্যাব অথোরিটি এর প্রতিকার চেয়ে এখনও সরকারের কাছে তাদের দাবী জানিয়েই চলছে। একটিবারের জন্য চিন্তা করে দেখুন, এই কালো টাকা দিয়ে প্লট কিংবা ফ্ল্যাট কিনে শুধুমাত্র ঐ ব্যাক্তি বিশেষই লাভবান হচ্ছে, বাস্তবিক অর্থে সরকার কিংবা দেশ কিন্তু বিন্দুমাত্রও লাভবান হচ্ছে না। তবে হ্যা, সরকার ঐ ব্যাক্তির কালো টাকায় কেনা ফ্ল্যাট কিংবা প্লটের রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ কিছু একটা এমাউন্টের অর্থ পাচ্ছে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে। আমার প্রশ্ন, আমাদের দেশে কালো টাকা সাদা করার জন্য আমরা শিপিং খাতে বিনিয়োগে সরকারকে উদ্বুদ্ধ করতে কখনো কেউ এগিয়ে আসিনি কেন? এই খাতে মুষ্টিমেয় ব্যাক্তি যদি গুষ্টি আকারে সরকারের সংগে একীভূত হয়ে পিপিপি (প্রাইভেট পাবলিক প্রপার্টি) হিসেবে ঐ কালো টাকা দিয়ে জাহাজ কিনে দেশ কিংবা বিদেশে পরিচালনা করে, একবারের জন্য কি আমরা ভেবে দেখেছি, আমাদের দেশের অর্থনীতির জন্য তা কতটা সুফল বয়ে নিয়ে আসবে? ব্যাক্তি বিশেষ তো বটেই, সরকারও প্রচুর লাভবান হবে এতে করে। শুধুই তাই নয় বরং এসব দেশী বিদেশী পতাকাবাহী জাহাজে আমাদের দেশের সরকারী/বেসরকারী একাডেমী থেকে পাশ করা অসংখ্য মেরিন অফিসার, ক্যাডেট, এবং নাবিকদের চাকুরীর অনেকখানি সংস্থান হতে পারে এভাবে। সরকার যেভাবে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের জন্য এগিয়ে এসেছে, আশা করা যায় আমাদের পক্ষ থেকে যদি BMMOA এর প্রতিনিধিদল সরকারের উচ্চপর্যায়ে আরও সুগঠিত ভাবে এই আলোচনা প্রস্তাব পেশ করে, তাহলে হয়তোবা একবারে না হলেও ধীরে ধীরে সরকারের নীতি নির্ধারকদের কাছে বিষয়টি বিবেচনাযোগ্য হলেও হতে পারে।

প্রসঙ্গতই বলছি, জার্মান সহ পৃথিবীর অনেক দেশেই বেশ কিছু শিপিং কম্পানী রয়েছে, যে কম্পানী গুলোর মালিক ব্যাংক এবং চাকুরীজীবী ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার/আদালতের উকিল সহ বিভিন্ন প্রফেশনের প্রোফেশনাল যৌথভাবে। অনেক দেশেই সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে বিভিন্ন রকমের কর রেয়াত দেয়া হয়ে থাকে যদি কেউ সমষ্টি আকারে সরকারের এমন কোনো সেক্টরে বিনিয়োগ করে, যেখানে কিনা বিনিয়োগ করতে প্রচুর অর্থ/ফান্ডের প্রয়োজন হয়। আমি নিজেও বিগত ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এমন একটি জার্মানি ওনারশীপ কম্পানীতে কর্মরত রয়েছি, যেখানে সেই দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংক আমাদের কম্পানীর সবগুলো জাহাজের আসল মালিক।

প্রস্তাবনা ) মেরিটাইম পররাষ্ট্রনীতি

বিশ্ব বাজারে আমাদের দেশীয় অফিসার এবং নাবিকগন পিছিয়ে থাকার অন্যতম বড় কারন হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আমাদের বাংলাদেশীদের ভিসা না হওয়া। বিভিন্ন কম্পানী বাংলাদেশের নাবিকদের একারনে তাঁদের বিদেশী পতাকাবাহী জাহাজে নিয়োগ প্রদান করতে একদমই অনাগ্রহ প্রকাশ করে থাকে। শুধু জাহাজে চাকুরীরত  নাবিকগনের কথাই বা বলি কেন, বিভিন্ন দেশের অনেক অনেক মেরিটাইম অফিসে চাকুরীরত আমাদের দেশের সবুজ পাসপোর্টধারী অনেক অনেক মেরিন সারভেয়ার, মেরিন সুপার কিংবা টেকনিক্যাল সুপারদেরও কর্মস্থান যেমন  সিংগাপুর/মালয়শিয়া/হংকং/দুবাই ইত্যাদি ছেড়ে কম্পানীর ফ্লিটের শীপ ভিজিটিং করতে বা শীপ সারভ্যে করতে বিভিন্ন দেশে চলাচল করতে হয়। অধিকাংশ সময়েই তাঁদেরকেও ভিসা দেয়া হয়না বা ভিসা পেতে নাজেহাল হতে হয় শুধুমাত্র বাংলাদেশী নাগরিক হবার জন্য। আর বাংলাদেশের অফিসার/নাবিকদের অনেক দেশের অন এরাইভেল ভিসা না হওয়াতে সাইন অন এবং সাইন অফ করাতে ম্যানিং এজেন্টদেরও অনেক কষ্ট পোহাতে হয়। পক্ষান্তরে পার্শ্ববর্তী ইন্ডিয়া, মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, চীন, ইউক্রেন, রাশিয়া সহ অনেক দেশের সারভ্যেয়ার,  মেরিন সুপার, টেকনিক্যাল সুপার, অফিসার কিংবা নাবিকদের এই সমস্যা পোহাতে হয় না। তাদেরকে নিয়ে কোম্পানিগুলোকে কখনওই কোনো দেশে কোনো বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়না। প্রশ্ন হচ্ছে, সার্কভুক্ত এবং পার্শ্ববর্তী এসব দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়গুলোও যদি তাঁদের দেশের নাগরিক এবং নাবিকদের জন্য অন্যদেশের সংগে এমনভাবে দ্বিপাক্ষিয় চুক্তি করতে পারে, তাহলে আমাদের দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কেনো তা পারছেনা? কেনইবা আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী মহোদয়কে আমরা বুঝাতে পারছিনা যে আমরা তাঁর দেশের কত বড় একটা শ্রম প্রোডাক্ট! যেই প্রোডাক্ট আন্তর্জাতিক মানের সনদায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশেই তৈরি হচ্ছে এবং যা কিনা আই এম ও থেকে স্বীকৃত সম্পূর্ণ সাদা তালিকা ভুক্ত একটি দেশের প্রোডাক্ট। প্রতিমাসে একজন ক্যাপ্টেন বা একজন চীফ ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে একজন সীম্যান পর্যন্ত যে পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশে নিয়ে এসে দেশের অর্থনীতির কতবড় উপকার করছে, বিষয়টি যদি আমাদের দেশের কর্ণধারকে খুব ভালো ভাবে বুঝানো সম্ভব হতো, তাহলে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সংগে অন্যন্য আলোচনার মধ্যেও উনি মেরিন সেক্টরের এই মেরিনারদের ভিসা সমস্যা নিয়ে যে কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সংগেই সবার আগে কথা বলতেন বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস। এখন প্রয়োজন শুধু বিষয়বস্তুটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহদয়ের কাছে যথাযথভাবে উপস্থাপন করা। আর এই কাজগুলো করতে হবে আমাদের সম্পূর্ণ একত্রিত হয়েই।

আমাদের সিনিয়রেরাই সবসময়ে আমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে এসেছে চাকুরীজীবনের একদম প্রথম থেকেই। তাই আমার আকুল আবেদন এই মেরিন কমিউনিটির কাছে, আমরা কি আমাদের সমস্যাগুলো নিয়ে BMMOA এর মাধ্যমে সিনিয়রদের এবং  JMAA, NI, ImERST, সিংগাপুর, ইউকে, ইউ এস এ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, মালয়শিয়া, হংকং সহ অন্য সকল ওভারসিস মেরিনার্স গ্রুপ রয়েছে তাঁদের সকলের দিক নির্দেশনা মেনে সরকারের যথাযথ করতিপক্ষের কর্ণগোচর করতে পারি? অনুগ্রহ করে যে যার অবস্থানে রয়েছেন সেখান থেকেই কিছু কিছু দিক নির্দেশনা কি দিতে পারেন আমাদের মেরিটাইম কমিউনিটিকে?

আশা করছি সকলেই কিছু কিছু গঠনমূলক আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হবে এবং BMMOA এর প্রতিনিধিদল সরকারের অতিউচ্চপর্যায়ে আলোচ্য বিষয়গুলো উপস্থাপন করতে এগিয়ে আসবেন।

সকলকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Capt. Shamsul A Khan
31ST BMA – N

Comments are closed.