Corruption by Nazmul Huq is sinking the Ocean Transport office

Comments Off on Corruption by Nazmul Huq is sinking the Ocean Transport office

জাল সনদে চাকুরী লাভের অভিযোগ

নাজমুল হকের বেপরোয়া দুর্নীতিতে ডুবতে বসেছে সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর

স্টাফ রিপোর্টার

fake certificate
সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের শীপ সার্ভেয়ারে, প্রকৌশলী কাম পরীক্ষক এস এম নাজমূল হকের বিরুদ্ধে ব্যাপক ঘুষ- দুর্নীতি ও জাল সনদে চাকুরী লাভের অভিযোগ উঠেছে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, নৌ পরিবহন মন্ত্রী মোঃ সাজাহান খানের স্ত্রীকে ম্যানেজ করে এই  প্রকৌশলী ডিজি শিপিং অফিসে অবিশ্বাস্য দাপট প্রদর্শন করে যাচ্ছেন। এমন কি নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়েও তার দাপট সীমাহীন। মন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে সম্প্রতি তিনি জাপান সরকারের অনুদানপুষ্ট প্রায় ৪ শত কোটি টাকা মূল্যের একটি প্রকল্পের পিডি পদডঁ ৫ কোটি টাকার বিনিময়ে হাতিয়ে  নিয়েছেন। অথচ: এই পদটি অধিকারের যোগ্যতা তার নেই। সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভত  ভাবে এসএম নাজমূল হককে এই পদে নিয়োগ দান করা হয়েছে। ডিজি শিপিং অফিসে এ নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সরকারী বিধি মোতাবেক এই পদটি পাবার কথা ডিজি শিপিং এর প্রধান প্রকৌশলী আথবা চীফ নোটিক্যাল ইঞ্জিনিয়িারের। অবৈধ পথে পিডি পদটি দখল করার পর এসএম নাজমূল হক এখন ফুরফুরে মেজাজে চলাফেরা করছেন।
আরো জানাগেছে, এস.এম নাজমূল হক চাকুরী লাভের সময় পিএসসিতে জাল শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা সনদ জমা দিয়ে নিয়োগ লাভ করেছেন। তার বিএসসি, এমবিএ, পিএইচডি শিক্ষা সনদ ভুয়া বলে দাবী করেছেন একাধিক আত্মীয় স্বজন। এছাড়া ডিজি শিপিং এর শীপ সার্ভেয়ারের প্রকৌশলী কাম পরীক্ষক পদে নিয়োগ পেতে হলে যে কোন বিদেশী জাহাজে প্রধান প্রকৌশলী  হিসেবে কমপক্ষে ২ বছরের চাকুরীর অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। কিন্তু এসএম নাজমুল হকের  সেই অভিজ্ঞতা নেই। তিনি পিএসসির তৎকালীন সচিবকে ২০ লাখ টাকা উৎকোচ প্রদান করে অভিজ্ঞতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল সনদে নিয়োগ লাভ করেছেন বলে জোরাল অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সূত্রমতে পিএসপির তৎকালীন সচিব নাকি এসএম নাজমুল হকের বিএল কলেজের বড় ভাই ছিলেন। পূর্ব পরিচয় থাকার সুবাদে খুব সহজেই তিনি অবৈধ পথে নিয়োগ লাভে সক্ষম হন। ঐ সচিবের  মাধ্যমে নাকি তিনি অন্য প্রার্থীদের কাগজপত্র সরিয়ে সহজেই নিয়োগ লাভের পথ পরিষ্কার করেন। বিষয়টি তদন্তের জোর দাবী তোলা হয়েছে।
এদিকে সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের একাধিক সূত্রে জানাগেছে, নিয়োগ লাভের পর থেকেই এসএম নাজমুল হক বেপরোয়া দুর্নীতি শুরু করেন। তিনি অধিদফতরের সাবেক ডিজি কম: জুবায়েরকে হস্তগত করে প্রধান প্রকৌশলী কাজী ফখরুল ইসলামকে ওএসডি করে রাখেন ৩টি বছর এবং তার নামে দু’দকে ৮-১০ টি মামলা দেন। এরপর একাই অধিদফতরের ৩টি পদ দখল করে বেপরোয়া ঘুষ দুর্নীতি শুরু করেন। সূত্রমতে ডিজি কম: জুবায়েরের আমলে অনিয়ম দুর্নীতি করে প্রায় শত কোটি টাকার  মালিক বনে যান এসএম নাজমূল হক। এসময় তিনি এককভাবে প্রতি মাসে ৩/৪ শত নৌ-যান সার্ভে, রেজিষ্ট্রেশন, ড্রাইভার, ও মেরিন ক্যাডেটদের পাশ সনদ প্রদান করেন। একই সাথে কয়েক হাজার অযোগ্য মেরিন ক্যাডেটদের বিদেশী জাহাজে সুযোগ করে দেন। এছাড়া যোগ্যতা না থাকলেও তিনি ৪০/৫০ টি বেসরকারী মেরিন একাডেমী অনুমোদন দিয়ে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। তিনি বিধি ভংগ করে প্রায় ১ শত রূপান্তরিত জাহাজ উপকূল অতিক্রমের অনুমোদন দিয়ে কোটি টাকা কামিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা লংঘনকরে ৫ কোটি টাকার বিনিময়ে একটি বেসরকারী কন্টেইনার টার্মিনাল অনুমোদন দিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
আরো জানাগেছে, বাংলাদেশের সাথে এমইউ (মেমো: অব আন্ডারস্টান্ডিং) চুক্তি না থাকা সত্ত্বেও তিনি বেলিজের আনুমানিক ৩০টি (সিওআর) সার্টিফিকেট অব রিকগনেশন (হড় ড়নলবপঃরড়হ) সনদ  প্রদান করেছেন। যা আইএমও আইনের পরিপন্থি। প্রতিটি সনদ থেকে তিনি ৫ লাখ টাকা হারে উৎকোচ গ্রহণ করেছেন। এতে করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
অনুসন্ধানকালে জানাগেছে, এস এম নাজমূল হক তার ডিজি শিপিং অফিসে বসেই অবৈধ ঘুষ দুর্নীতি চর্চা করেন। ষুঘ আদায়ের জন্য তিনি তার অফিসে আবির ও মাসুদ নামে দু’জন বহিরাগতকে নিয়োগ দিয়েছেন। এই দুই বহিরাগত ডিজি শিপিং অফিসে সরকারী কর্মচারীদের মতই অবস্থান করেন এবং অধিদফতরের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল পত্রে হস্তক্ষেপ করেন। তাদের বিরুদ্ধে  ডিজি শিপিং এর অতি গোপনীয় তথ্য ও দলিল পত্র পাচারের জোরাল অভিযোগ রয়েছে। এই দুই বহিরাগতের মাধ্যমেই এসএম নাজমূল হক নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর এলাকার শীপ গুলো সার্ভে করেন বলে জানাগেছে। তাদের মাধ্যমে প্রতি মাসে তিনি ৩/৪ শত জাহাজ সার্ভে করে অফিসে বসেই অর্থের বিনিময়ে সনদ প্রদান করে যাচ্ছেন। সরকারী কর্মচারী না হয়েও কিভাবে আবির ও মাসুদ ডিজি শিপিং অফিসে অবস্থান ও সরকারী ফাইলে হস্তক্ষেপ করছেন সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
একটি বিশেষ সূত্রে জানাগেছে, এসএম নাজমূল হক ৪ দলীয় জোট সরকার আমলে নিয়োগ লাভ করার সময় বিএনপি নেতা ও তৎকালীন এমপি আলী আজগর লবীর কাছে নিজেকে ছাত্রদলের নেতা ও বিএনপির একনিষ্ঠ সমর্থক হিসাবে পরিচয় দেন। তৎপর তার শশুর বাড়ীর আত্মীয় স্বজনদের মাধ্যমে হাওয়া ভবনে তদবীর করে চাকুরী লাভ করেন।
প্রথমে তিনি বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ডিজিএম হিসাবে চাকুরীতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে লিয়েনে ডিজি শিপিং এ পরীক্ষক হিসাবে বদল হন। এখানে এসে বেপরোয়া দুর্নীতি শুরু করলে তৎকালীন নৌ-পরিবহন মন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেন ক্ষুব্ধ হয়ে এসএম নাজমূল হককে চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমীতে বদলী করেন। সেখানে কিছুদিন চীফ ইঞ্জি: চলতি দায়িত্ব পদে চাকুরী করে বিএনপির প্রভাবশালী নেতা আলী আজগর লবী এমপিকে ৫ লাখ টাকা উপটোকন দিয়ে হাওয়া ভবনের তদবীরে আবার ডিজি শিপিং অফিসে বদলী হয়ে আসেন।
এসময় তারেক কোকোর মালিকানাধীন কোকো -৪ লঞ্চটি ডুবে প্রায় ৭ শত যাত্রীর প্রাণ হানী ঘটে। এই লঞ্চের সার্ভে কারক ছিলেন এসএম নাজমূল হক। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি হলে তদন্ত কমিটি এস এম নাজমূলকে দায়ী করে রির্পোট প্রদান করে। কিন্তু খুঁটির জোর থাকায় তিনি বহাল থাকেন স্বপদে। ২০০৮ সালে মন্ত্রী সাজাহান খান একবার এসএম নাজমূল হককে চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমীতে বদলী করেন। তখন মন্ত্রীর স্ত্রীকে ২ কোটি টাকা উৎকোচ দিয়ে আবার বদলী হয়ে ডিজি শিপিং অফিসে চলে আসেন। এই সময়ে ডিজি কম: জুবায়েরের সাথে গোপন চুক্তিতে  বেপরোয়া দুর্নীতি শুরু করেন।
অনুসন্ধানে আরো জানাগেছে, তিনি যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও ১৪/১৫ টি বেসরকারী মেরিন একাডেমী অনুমোদন দিয়ে প্রতিটি থেকে ৬০/৭০ লক্ষ টাকা হারে উৎকোচ গ্রহণ করেছেন এসএম নাজমূল হক।
এসব একাডেমী গুলো হলো: আটলান্টিক মেরিন একাডেমী উত্তরা, ঢাকা, মেরিনা একাডেমী মগবাজার, ঢাকা, ক্যামব্রীজ মেরিন একাডেমী উত্তরা, ঢাকা, শাহ মেরিন একাডেমী শ্যামলী, ঢাকা। মাস মেরিন একাডেমী, চট্টগ্রাম। এশিয়ান মেরিন একাডেমী, চট্টগ্রাম, -অবিঃ মেরিন একাডেমী, চট্টগ্রাম, ডস মেরিটাইম একাডেমী, চট্টগ্রাম, ন্যাশনাল মেরিটাইম একাডেমী চট্টগ্রাম, ড়পবধ মেরিটাইম একাডেমী চট্টগ্রাম, ওঘঞঅ  মেরিন একাডেমী, ঢাকা,  গরংঃ একাডেমী চট্টগ্রাম ও ইউএস মেরিন একাডেমী ঢাকা। এসব বেসরকারী মেরিন একাডেমীর কমপক্ষে ৮টির সাথে এস এম নাজমূল হকের ব্যবসায়ীক শেয়ার রয়েছে। মজার ব্যাপার হলো এসব একাডেমীর কয়েকটির অনুমোদন দানের ফাইল পত্রও ডিজি শিপিং অফিস থেকে গায়েব করে দেয়া হয়েছে। যেমন আটলান্টিক মেরিন একাডেমীর কোন ফাইল ডিজি শিপিং অফিসে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা।
আরো জানাগেছে, এস.এম নাজমূল হক রাঙ্গামাটিতে ২০/৩০টি অস্তিত্ববিহীন লঞ্চের রেজিষ্ট্রেশন প্রদান করেছেন। প্রতিটি রেজিষ্ট্রেশনে ঘুষ নিয়েছেন ২ লাখ টাকা। বাস্তবে এ সব লঞ্চের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। অসাধু একটি চক্র এই রেজিষ্ট্রেশন নম্বর অন্য লঞ্চে ব্যবহার করছে। এতে করে সরকার মোটা অংকের টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
ডিজি শিপিং অফিসের একটি বিশেষ সূত্রে জানাগেছে, এসএম নাজমূল হক মোটা অংকের টাকা উৎকোচ গ্রহণ করে গ্রেসটন কমিয়ে ১৩/১৪ টি লঞ্চের রেজিষ্ট্রেশন দিয়েছেন। লঞ্চগুলো হলো: এমভি তাজ তানহা-১, এমভি জান্নাতুল, এমভি দুর-দুরন্ত, এমভি সজল এক্সপ্রেস, ওটি সাদিয়া আনিক, এমভি আয়শা জান্নাত, এমভি আব্দুল্লাহ সায়াদ, এমএল শাহ আলী-৪, এমবি তুর পাহাড় ড্রেজার, এমভি আকিজ লজিস্টিক-১০, এমভি ইফতি মাহমুদ-৩, ও এমভি খায়রুল বাহার। গ্রেসটন কম দেখিয়ে রেজিষ্ট্রেশন প্রদান করায় সরকার কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
আরো জানাগেছে, এসএম নাজমূল হক ২০১০ সালে এমভি মিরাজ-৪, নামের একটি যান্ত্রিক ত্র“টিপূর্ণ লঞ্চকে নিবন্ধন ও ফিটনেস সনদ প্রদান করে অবৈধ ভাবে এক বছর চলাচলের সুযোগ করে দেন। পরবর্তীতে এই লঞ্চটি দুঘটনার শিকার হলে অনেক যাত্রীর প্রাণ হানী ঘটে।
এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হলে ঐ তদন্ত কমিটিতে প্রভাব বিস্তার করে এসএম নাজমূল হক তার অনুকুলে রির্পোট প্রদান বাধ্য করেন। এঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ সাংবাদিক সম্মেলন ও মানব বন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে। এছাড়া সম্প্রতি পদ্মা নদীতে ডুবে যাওয়া পিনাক-৪ লঞ্চটির ৩০-০৪-২০১৪ তাং পর্যন্ত সার্ভে সনদ দিয়েছিলেন এসএম নাজমূল হক। সূত্রমতে, এসব অনিময় দুর্নীতির মাধ্যমে এসএম নাজমূল হক বর্তমানে শতকোটি টাকা ও সম্পদের মালিক হয়েছেন।
তিনি অবৈধ পথে অর্জিত এসব টাকা ঢাকা খুলনা ও চট্টগ্রামের ১৪/১৫ টি সরকারী বেসরকারী ব্যাংকে নামে বেনামে হিসাব খুলে জমা রেখেছেন। ব্যাংক গুলো হলো: সাউথ ইস্ট ব্যাংক, ইবিএল ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ব্রাক ব্যাংক, এশিয়া ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ডাচ্ বাংলা ব্যাংক, ও ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড। একেকটি হিসাবে তিনি এককটি আইডি ও স্বাক্ষর ব্যবহার করে থাকেন। এসব ব্যাংক একাউন্টে তার শত কোটি টাকা জমা আছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
এছাড়া তিনি ৫ খানা গাড়ী ক্রয় করেছেন, এর মধ্যে ২ খানা মাইক্রো ও ৩ খানা প্রাইভেট কার। ২টি এলিয়ন ও একটি করোলা। একটি এলিয়ন গাড়ী নং ঢাকা মেট্রো গ-৩১৫৮৬৯। একটি প্রাইভেট তিনি নিজে ব্যবহার করেন, ১টি তার স্ত্রী ও ১টি তার কন্যা। অপর দুটি মাইক্রো রেন্ট-এ কার এ ভাড়া দেয়া হয়েছে।
তিনি ঢাকার উত্তরার পূর্বাচল সিটি, বারিধারা বসুন্ধরা, সিদ্বেশ্বরী, রাজউকের ঝিলঝিল প্রকল্প, আশিয়ান সিটি, মিরপুর ডিএইচ এস এলাকায়, ৮/১০ টি ফ্ল্যাট ও প্লট ক্রয় করেছেন। এছাড়া খুলনা সোনাডাঙ্গায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি মসজিদ নির্মাণ করছেন। চট্টগ্রামে একটি বিদেশী নাবিক নিয়োগ এজেন্সী প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই প্রতিষ্ঠানের এমডি তার স্ত্রী। খুলনা, যশোর ও চট্টগ্রামে বেনামে। ১৫/১৬ বিঘা জমি ক্রয় করে রেখেছেন। ঢাকার কয়েকটি লিজিং কোম্পানীতে অর্থ বিনিয়োগ করেছেন। এফডিআর করেছেন কয়েক কোটি টাকা। সব মিলিয়ে তার সম্পদের পরিমান শত কোটি টাকারও বেশি বলে মনে করছেন ডিজি শিপিং এর কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তিনি সিদ্বেশ্বরীর যে ফ্ল্যাটে বসবাস করেন তার নম্বর, ২নং সিদ্বেশ্বরী (ডোম ইনো) ফ্ল্যাট নং বি-২। এই ফ্ল্যাটের মূল্য কমপক্ষে এক কোটি টাকা। এছাড়া ফ্ল্যাটের ভেতরে কোটি টাকার ফার্নিচার রয়েছে। প্রশ্ন হলো : ৩০/৩৫ হাজার টাকা বেতনের একজন কর্মকর্তা এত ধন সম্পদ কোথায় পেলেন?
অনুসন্ধানকালে জানাগেছে, অবৈধ পথে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে সেই টাকায় বিত্তবিলাসী জীবন যাপন করছেন এসএম নাজমূল হক। তিনি ঘরে স্ত্রী সন্তান থাকাসত্ত্বেও মেঘলা নামের এক মডেল কন্যাকে দ্বিতীয় বিয়ে করে খিলগাঁয়ের ফ্ল্যাটে রেখেছেন। এছাড়া নিত্য নতুন মডেল কন্যা, ও টিভি অভিনেত্রীদের ভোগ করার জন্য নিজ মালিকানায় একটি প্রডাকশন হাউস প্রতিষ্ঠা করেছেন। ইস্কাটনে অবস্থিত এই হাউসে প্রায়ই সন্ধ্যার পর তিনি মডেল কন্যাদের নিয়ে আনন্দ ফূর্তি করেন। রাজধানীর মক্ষী মহলে গিয়ে অর্থের সিনেমার নায়িকাদের ভোগ করে থাকেন। তাদের পেছনে তিনি অঢেল টাকা ব্যয় করে যাচ্ছেন। ইতিপূর্বে একবার একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা নারী ভোগের ভিডিও চিত্র ও স্টিল ছবিসহ তাকে আটক করেছিলো। তখন তাদেরকে মোটা অংকের টাকা উৎকোচ প্রদান করে সে যাত্রা রক্ষা পান। তবে গোয়েন্দা সংস্থার হাতে সেই ভিডিওচিত্র ও ছবি এখনো রয়েগেছে।
সূত্রমতে, ২০১৩ সালের শেষ ভাগে এসএম নাজমূল হক সচিবালয়ের গেট পাস জাল করেন। প্রধান প্রকৌশলীর গেট পাসে নিজের ছবি লাগিয়ে প্রবেশ করার সময় সচিবালয় গেটের পুলিশ কর্তার হাতে আটক হন। একজন সরকারী কর্মকর্তা হয়েও সচিবালয়ের গেট পাশ জাল করার অপরাধে তাকে থানায় সোপর্দ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তখন তিনি ৭/৮ লাখ টাকা খরচ করে নিজেকে মুক্ত করেন। এ ঘটনার পর ডিজি শিপিং ঐ দু’টি গেট পাশেই সিজড করে নিজের জিম্মায় রেখে দেন।
এভাবে একটার পর একটা অপকর্ম করেও কেবলমাত্র অবৈধ অর্থের জোরে পার পেয়ে যাচ্ছেন ডিজি শিপিং অফিসের কলংক প্রকৌশলী ও পরীক্ষক এসএম নাজমূল হক।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে এস এম নাজমূল হক বলেন, ভাই লঞ্চ দুর্ঘটনার তদন্ত নিয়ে খুব ঝামেলায় আছি। আপনি পরে আমার সাথে দেখা করেন।
এসএম নাজমূল হকের উল্লখিত অনিময় দুনীতি ও অবৈধ পথে শতকোটি টাকার অর্থ-সম্পদ অর্জনের বিষয়ে তদন্ত কমিটি করার জোর দাবী তুলেছেন ডিজি শিপিং অফিসের সৎ ও দেশ প্রেমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এক্ষেত্রে তারা নৌ পরিবহন মন্ত্রী, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক, রাষ্ট্রিয় গোয়েন্দা সংস্থা ও দু’দকের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করেছেন।

Source: Samokal

Comments are closed.